৩৫২ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতলো পাকিস্তান। অবিশ্বাস্য রানতাড়ায় দলকে জেতালেন মোহাম্মদ রিজওয়ান এবং সালমান আলী আঘা। ত্রিদেশীয় সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে চলে গিয়েছে পাকিস্তান, আজ শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচে মাঠে নামবে মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল। করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার টনি ডি জর্জি এবং অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার ব্যাটে চড়ে এগোতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। উদ্বোধনী জুটি থেকে এসেছে ৫১ রান। ১৮ বলে ২২ রান করে আউট হয়েছেন ডি জর্জি। এরপর বাভুমার সাথে যোগ দেন ম্যাথু ব্রিটজকে। দুজনের কার্যকরী ব্যাটিংয়ে চড়ে এগোতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফিফটি ছুঁয়েছেন দুজনই। ক্রিজে দারুণভাবে জমে যান বাভুমা এবং ব্রিটজকে। ফিফটি ছুঁয়ে দুজনই এগোতে থাকেন সেঞ্চুরির দিকে। সেঞ্চুরিটা ছুঁতে পারেননি বাভুমা কিংবা ব্রিটজকে কেউই। দলের ১৭০ রানের মাথাতে ৯৬ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন বাভুমা। অন্যদিকে ব্রিটজকে আরও কিছুক্ষণ টিকে ছিলেন। তিনিও আউট হয়েছেন ৮০র ঘরে। ৮৪ বলে ৮৩ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলে আউট হন ব্রিটজকে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস এগিয়েছে হেইনরিখ ক্লাসেনের ব্যাটে চড়ে। ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের বোলারদের পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে রান তুলেছেন ক্লাসেন। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দ্রুতই ছুঁয়েছেন ফিফটি। ফিফটি ছুঁয়ে আরও বড় রানের দিকে এগোতে থাকেন ক্লাসেন। এদিন কাউকেই পাত্তা দিচ্ছিলেন না তিনি। ক্লাসেনের ব্যাটে চড়েই ৩০০ রানের কোটা পার করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ক্লাসেন নিজেও চলে যান সেঞ্চুরির খুব কাছে। তবে বাভুমা এবং ব্রিটজকেও মত সেঞ্চুরি মিসের হতাশায় পুড়েছেন ক্লাসেনও। ৫৬ বলে ৮৭ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংস খেলে দলের ৩১৯ রানের মাথাতে আউট হন ক্লাসেন। শেষ দিকে ৩২ বলে ৪৪ রানের ক্যামিও খেলে অপরাজিত ছিলেন কাইল ভেরেইনা। ৯ বলে ১৫ রান করে টিকে ছিলেন করবিন বশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারের খেলা শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৫২ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় দক্ষিণ আফ্রিকা। পাকিস্তানের হয়ে ২ উইকেট তুলেছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। ১টি করে উইকেট শিকার করেছেন খুশদিল শাহ এবং নাসিম শাহ। জবাব দিতে নেমে পাকিস্তান পেয়েছে উড়ন্ত সূচনা। ফখর জামানের ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকে পাকিস্তান। সাথে বাবর আজমও চালিয়ে খেলছিলেন। উদ্বোধনী জুটি থেকে এসেছে ৫৭ রান। ১৯ বলে ২৩ রান করেছেন বাবর। তিনে নামা সাউদ শাকিল সুবিধা করতে পারেননি। ১৬ বলে ১৫ রান করেন শাকিল। শাকিলের আউটের পরের ওভারেই আউট হয়েছেন ফখর। ২৮ বলে ৪১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে যান ফখর জামান। এরপর ক্রিজে জুটি বাঁধেন সালমান আলী আঘা এবং অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। দারুণ কার্যকরী ব্যাটিংয়ে এগিয়েছেন রিজওয়ান এবং সালমান। সময়ের সাথে সাথে যেন ক্রিজে আঠার মত লেগে যান রিজওয়ান-সালমান। প্রোটিয়া বোলারদের পিটিয়ে তক্তা বানিয়েছেন দুজন। পরিস্থিতি বুঝে রানের গতি বাড়িয়েছেন দুজন। ফিফটি ছুঁয়ে এগিয়েছেন আরও বড় কিছুর দিকে। রিজওয়ান এবং সালমান যেন স্টিম রোলার চালাতে থাকেন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের উপর। মারমুখি ব্যাটিংয়ে দলকে লক্ষ্যের কাছাকাছি নিয়ে যেতে থাকেন দুজন। দুর্দান্ত রান তাড়ায় ম্যাচ জেতার দিকে এগোতে থাকে পাকিস্তান। দুজন চলে যান সেঞ্চুরির খুব কাছে। আগে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন রিজওয়ান। ছক্কা হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন পাকিস্তানের দলপতি। এরপর সেঞ্চুরি পেয়েছেন সালমানও। সেঞ্চুরির পরেও দোর্দন্ড প্রতাপে এগিয়েছেন দুজন। তাতে পাকিস্তানের জয়টা হয়ে যায় কেবল সময়ের ব্যাপার। শেষের আগের ওভারের শেষের আগের বলে আউট হন সালমান। ১০৩ বলে ১৩৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে যান তিনি, দলের জয় অবশ্য নিশ্চিত ততক্ষণে। ৭ বলে দরকার ছিল ২ রান, ক্রিজে আসা তৈয়ব তাহির চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করে ফেলেন। ৬ বল এবং ৬ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে চলে যায় পাকিস্তান, নিশ্চিত করে ফেলে ফাইনাল। ১২৮ বলে ১২২ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন রিজওয়ান। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২ উইকেট নেন উইয়ান মাল্ডার। ১টি করে উইকেট শিকার করেন করবিন বশ এবং লুঙ্গি এনগিডি। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ফাইনালে মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড এবং পাকিস্তান।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

রিজওয়ান-সালমানের ব্যাটে ভর করে ফাইনালে পাকিস্তান
- আপলোড সময় : ১৪-০২-২০২৫ ১২:০৯:৩১ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৪-০২-২০২৫ ১২:০৯:৩১ পূর্বাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ